Tuesday, May 27, 2025

সরকার ও সেনাবাহিনী একে অপরের বিপক্ষে অবস্থান নেয়নি।

SHARE

 


নিজস্ব প্রতিবেদক

সরকার ও সেনাবাহিনী একে অপরের বিপরীতে দাঁড়ায়নি বরং একসঙ্গে কাজ করছে। আজ সোমবার এক ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ কথা জানিয়েছে সেনা সদর।
ঢাকা সেনানিবাসের অফিসার্স মেসে অনুষ্ঠিত এই ব্রিফিংয়ে দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতিসহ সমসাময়িক বিভিন্ন বিষয়ে কথা বলেন সেনাবাহিনীর মিলিটারি অপারেশনসের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. নাজিম-উদ-দৌলা এবং সেনা সদরের মিলিটারি অপারেশনস ডাইরেক্টরেটের কর্নেল স্টাফ কর্নেল মো. শফিকুল ইসলাম।

মিয়ানমারের রাখাইনে মানবিক করিডর দেওয়া নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘দেশের নিরাপত্তা বিঘ্নিত হয়, এমন কোনো কাজে সেনাবাহিনী সম্পৃক্ত হবে না।’

করিডর নিয়ে সাংবাদিকদের অপর এক প্রশ্নের জবাবে ব্রিগেডিয়ার জেনারেল নাজিম-উদ-দৌলা বলেন, ‘এটা আমাদের দেশ। এ দেশের স্বার্থ, সার্বভৌমত্ব ও ভালো–মন্দের সঙ্গে আমরা সবাই জড়িত। এ দেশকে ভালো রাখতে হলে আমাদেরকেই রাখতে হবে।’

ব্রিগেডিয়ার নাজিম বলেন, ‘সরকার ও বাংলাদেশ সেনাবাহিনী খুব সুন্দরভাবে, ওতপ্রোতভাবে একে অপরের সম্পূরক হিসেবে কাজ করছে। আমরা প্রতিনিয়তই সরকারের সঙ্গে কাজ করছি, সরকারের নির্দেশনা মেনেই কাজ করছি। দেশ নিয়ে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন স্টেকহোল্ডাররা কথা বলতেই পারে। এটা নিয়ে আমরা যেভাবে চিন্তা করছি যে সরকারের সঙ্গে সেনাবাহিনীর বিশাল মতপার্থক্য হয়েছে, বিভেদ রয়েছে, মিডিয়াতে বিষয়টি যেভাবে আসছে—এ রকম আসলেই কিছু হয়নি। সরকার ও সেনাবাহিনী খুব সুন্দরভাবে একে অপরের সহযোগিতায় কাজ করছে। এটা ভুলভাবে ব‍্যাখ‍্যা করার কোনো সুযোগ নেই।

ব্রিগেডিয়ার নাজিম বলেন, ‘একটা বাজে অবস্থার ভেতর দিয়ে আমরা যাচ্ছিলাম। সেখান থেকেই আমরা কাজ করে যাচ্ছি। অন্য সংস্থাগুলোও কাজ করে যাচ্ছে। আমরা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, সম্মিলিতভাবে কাজ করলে যে স্থিতিশীল অবস্থা আমরা চাই, সে অবস্থায় আমরা যেতে পারব। এ জন্য সবার সহযোগিতা প্রয়োজন। এ মুহূর্তে আমরা এমন কোনো স্বাভাবিক পরিস্থিতির মধ্যে নেই যে সবকিছু স্বাভাবিক চলবে। কিছু কিছু অসংগতি থাকতেই পারে। কিন্তু আমরা চেষ্টা করছি সেটাকে মিটিয়ে ফেলে যেন সম্মিলিতভাবে সামনের দিকে এগিয়ে যেতে পারি।’

মিয়ানমার সীমান্ত ও করিডর প্রসঙ্গ

মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে মানবিক করিডর–সংক্রান্ত আলোচনার বিষয়ে সেনাবাহিনীর বক্তব্য জানতে চাওয়া হলে কর্নেল শফিকুল ইসলাম বলেন, করিডর একটি স্পর্শকাতর বিষয়। দেশের নিরাপত্তা বিঘ্নিত হয়, এমন কোনো কাজে সেনাবাহিনী সম্পৃক্ত হবে না।

সীমান্তের সুরক্ষা নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে ব্রিগেডিয়ার জেনারেল নাজিম-উদ-দৌলা বলেন, ‘আমরা অবশ্যই সীমান্ত নিয়ে কোনো আপস করিনি। যতক্ষণ পর্যন্ত আমাদের গায়ে বিন্দু পরিমাণ শক্তি থাকবে, আমরা আপস করবও না। এটা আমাদের দেশ। যেকোনো মূল্যেই আমরা এটাকে রক্ষা করব।’

বাংলাদেশ–মিয়ানমার সীমান্ত নিয়ে মো. নাজিম-উদ-দৌলা বলেন, এই সীমান্ত অত্যন্ত ঝুঁকির মুখে আছে। এখানে মিয়ানমার সরকারের অস্তিত্ব বিলীনের পথে। আরাকান আর্মি রাখাইন রাজ্যের প্রায় পুরোটা, ৮৫–৯০ শতাংশ দখল করে নিয়েছে। কিছু জায়গা বাকি আছে। আবার আরাকান আর্মিও ‘অথরাইজড’ সংগঠন নয়। এই জায়গাটাতে সেভাবে না আছে সরকারের অস্তিত্ব, না আছে আরাকান আর্মিকে স্বীকৃতি দেওয়ার মতো অবস্থা। এ জন্য এ মুহূর্তে বাংলাদেশ–মিয়ানমারের সীমান্ত পরিস্থিতি নিঃসন্দেহে যেকোনো সময়ের তুলনায় সংবেদনশীল। সে জন্য কিছু সশস্ত্র গোষ্ঠীর মুভমেন্ট হওয়াটা অস্বাভাবিক নয়। তিনি বলেন, ‘সেনাবাহিনীর সহায়তায় বিজিবি সেখানে কাজ করছে। আমরা এই সীমান্তে প্রচণ্ডভাবে নজর রাখছি।’

রাখাইনের আরাকান আর্মি বাংলাদেশের পার্বত্য চট্টগ্রামে ঢুকে একটি অনুষ্ঠানে অংশ নিচ্ছে—এমন সংবাদের বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে কর্নেল শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘আরাকান আর্মির সঙ্গে আমাদের সরাসরি কোনো যোগাযোগ নেই। আপনারা গণমাধ্যমে যেটি দেখেছেন, সেটির বস্তুনিষ্ঠতা যথেষ্ট বিবেচনার দাবি রাখে।’

অফিসার্স অ্যাড্রেস নিয়ে আলোচনা

সেনাপ্রধানের অফিসার্স অ্যাড্রেসে জাতীয় সংসদ নির্বাচন, করিডর, বন্দর ও স্টারলিংকের বিষয়ে আলোচনা হয়েছে—এ বিষয়ে সেনা সদরের বক্তব্য জানতে চান সাংবাদিকেরা। উত্তরে কর্নেল মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, সেনাবাহিনীর প্রধান সময়ে সময়ে অফিসার ও সৈনিকদের সঙ্গে কথা বলে থাকেন এবং নির্দেশনা দিয়ে থাকেন। ওই অনুষ্ঠান তারই একটি ধারাবাহিকতা মাত্র। এখানে কোনো সাংবাদিককে ডাকা হয়নি বা আইএসপিআরও (আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর) সরকারিভাবে কোনো বিবৃতি দেয়নি। এ জন্য গণমাধ্যমে বা সামাজিক মাধ্যমে যা দেখছেন, তার সঠিকতা ও বস্তুনিষ্ঠতা যথেষ্ট বিবেচনার দাবি রাখে।

অফিসার্স অ্যাড্রেসে যে বিষয়গুলো এসেছে, সেগুলো সরকারকে আনুষ্ঠানিকভাবে বা অনানুষ্ঠানিকভাবে জানানো হয়েছে কি না—জানতে চাইলে মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, অফিসার্স অ্যাড্রেস নিতান্তই সেনাবাহিনীর অভ্যন্তরীণ বিষয়।

নির্বাচন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘নির্বাচন নিয়ে যথেষ্ট আলোচনা–সমালোচনা হয়েছে। এ নিয়ে আমরা আর কোনো কথা বলতে চাচ্ছি না।’

সংবাদ সম্মেলনে কথা বলেন সেনাসদরের মিলিটারি অপারেশনস ডাইরেক্টরেটের কর্নেল স্টাফ কর্নেল মো. শফিকুল ইসলাম। আজ সোমবার দুপুরে ঢাকা সেনানিবাসের অফিসার্স মেসে

ইউপিডিএফ ও কেএনএফ প্রসঙ্গ

১০ মে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে সংলাপে অংশ নেয় পার্বত্য চট্টগ্রামভিত্তিক ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট (ইউপিডিএফ)। ওই সংলাপে ইউপিডিএফ আঞ্চলিক দলগুলোর নিবন্ধনের জন্য বিদ্যমান শর্ত শিথিল করার প্রস্তাব দেয়। পাশাপাশি সংলাপে পার্বত্য চট্টগ্রামে স্বায়ত্তশাসনের দাবি নিয়েও আলোচনা হয়েছে বলে গণমাধ্যমে জানিয়েছিলেন দলটির সংগঠক মাইকেল চাকমা।

এই সংগঠনের সঙ্গে ঐকমত্য কমিশনের সংলাপের বিষয়েও প্রশ্ন আসে সেনা সদরের ব্রিফিংয়ে। জবাবে কর্নেল শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘পাহাড়ে যে দলের কথা বলেছেন, আপনারাই জানেন এটি একটি আত্মস্বীকৃত টেররিস্ট (সন্ত্রাসী) দল, যারা সংঘাতপূর্ণ কাজ করে থাকে। তাদের নির্বাচনে যুক্ত করা সমীচীন নয় বলে আমরা মনে করি।’

চট্টগ্রাম নগরের একটি কারখানা থেকে ছয় দিন আগে ২০ হাজার ৩০০টি সন্দেহজনক পোশাক (ইউনিফর্ম) জব্দ করা হয়েছে। ১৭ মে রাতে নগরের বায়েজিদ বোস্তামী থানার নয়ারহাট এলাকার রিংভো অ্যাপারেলস থেকে পোশাকগুলো জব্দ করে গোয়েন্দা পুলিশ। পরে পুলিশ জানায়, ইউনিফর্মগুলো পাহাড়ের সশস্ত্র সংগঠন কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্টের (কেএনএফ)। দুই কোটি টাকার চুক্তিতে ইউনিফর্মগুলো তৈরির ফরমাশ নেওয়া হয়।

পোশাক উদ্ধারের প্রসঙ্গ টেনে কুকি–চীনের তৎপরতা নিয়ে জানতে চাইলে মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, কুকি–চীন বম সম্প্রদায়কেন্দ্রিক একটি সংগঠন। তাদের মোট সংখ্যা ১২ হাজার। তাদের সবাই সশস্ত্র গ্রুপের সঙ্গে যুক্ত নয়। তাহলে তাদের যে পোশাকের সংখ্যার কথা বলা হয়েছে, তা নিয়ে যথেষ্ট সন্দেহ আছে। এই তথ্যগুলোর সত্যতা ও বস্তুনিষ্ঠতা যাচাইয়ের যথেষ্ট সুযোগ রয়েছে।

যেহেতু গণমাধ্যমের বিভিন্ন সংবাদ এবং সামাজিক মাধ্যমের খবরের বস্তুনিষ্ঠতা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে—তাহলে এসব বিষয়ে সেনাবাহিনী আনুষ্ঠানিক বিবৃতি দেবে কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে কর্নেল শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘এখন থেকে সপ্তাহের প্রতি বৃহস্পতিবার আমরা আপনাদেরকে বিষয়গুলো জানাব।’

পরে কেএনএফের বিষয়ে ব্রিগেডিয়ার জেনারেল নাজিম-উদ-দৌলা বলেন, ‘পার্বত্য চট্টগ্রামে কেএনএফের অস্ত্রের ব্যবহার আমরা দেখেছি। কয়েকজন সেনাসদস্য তাদের দ্বারা আক্রান্ত হয়েছেন এবং মৃত্যুবরণ করেছেন। কেএনএফের এতগুলো ইউনিফর্ম কোনো জায়গায় খুঁজে পাওয়া অবশ্যই উদ্বেগের বিষয়। এটা কোনো ভালো খবর না। এ বিষয়টি আমরা খুঁজে দেখার চেষ্টা করছি।’

ক্ষমতা নেওয়ার ইচ্ছা নেই

দেশের অস্থিতিশীল পরিস্থিতি বিবেচনা করে সেনাবাহিনী ক্ষমতায় যাচ্ছে, এমন কিছু আলোচনা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে রয়েছে উল্লেখ করে একজন সাংবাদিক এ বিষয়ে সেনা সদরের বক্তব্য জানতে চান। জবাবে কর্নেল শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘সেনাবাহিনীর ক্ষমতা নেওয়ার কোনো ইচ্ছা বা এ ধরনের কোনো আলোচনা আমাদের মধ্যে হয়নি। এ বিষয়ে আমরা কোনো তথ্য দিতে পারছি না।’

কর্নেল মো. শফিকুল ইসলামের কাছে জানতে চাওয়া হয়, সরকার ও সেনাবাহিনীর মুখোমুখি অবস্থানের কিছু আলোচনা সামনে আসছে, এ বিষয়ে সেনাবাহিনীর বক্তব্য কী? উত্তরে তিনি বলেন, ‘আমরা কোনো মুখোমুখি অবস্থান দেখছি না। আমাদের মধ্যে যথেষ্ট সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশ রয়েছে। আমরা একসাথে দেশের জন্য, জনগণের জন্য কাজ করে যাচ্ছি।’

দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষার ক্ষেত্রে যদি কোনো হুমকি আসে, তখন সেনাবাহিনীর অবস্থান কী হবে, জানতে চাইলে মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, দেশের সার্বভৌমত্ব বা নিরাপত্তা রক্ষার জন্য সেনাবাহিনী সর্বদা একতাবদ্ধ হয়ে কাজ করে আসছে। ভবিষ্যতেও দেশের জন্য, দেশের নিরাপত্তার জন্য এবং দেশের মানুষের জন্য কাজ করে যাবে।

আলোচনায় লালমনিরহাট বিমানবন্দর

লালমনিরহাট বিমানবন্দর নিয়ে অতীতে অনেক টানাপোড়েন ছিল উল্লেখ করে একজন সাংবাদিক জানতে চান, এই বিমানবন্দর ভবিষ্যতে অন্য কোনো দেশের ব্যবহারের সম্ভাবনা রয়েছে কি না? এ ক্ষেত্রে চীন ও ভারত দুটি দেশের প্রসঙ্গ টানেন ওই সাংবাদিক। জবাবে ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. নাজিম-উদ-দৌলা বলেন, ‘দেশের সক্ষমতা বৃদ্ধি পাচ্ছে। সে ক্ষেত্রে আমাদের প্রয়োজনীয়তাও বেড়েছে। লালমনিরহাটের বিমানবন্দরটি অনেক পুরোনো, তবে ব্যবহার হয়নি। প্রয়োজনের নিরিখে সেটাকে আবার সচল করা হচ্ছে। নতুন করে কাজে লাগানোর চেষ্টা করা হচ্ছে।’

ব্রিগেডিয়ার নাজিম বলেন, ‘দেশের সম্পদ দেশের প্রয়োজনে ব্যবহার হবে, এটাই তো স্বাভাবিক। এত দিন প্রয়োজন হয়নি, ব্যবহার হয়নি। এখন প্রয়োজন পড়েছে, ব্যবহার হচ্ছে। নতুন করে সংস্কার করা হচ্ছে। কলেবর বৃদ্ধি করা হচ্ছে। সেখানে নতুন কর্মকাণ্ড পরিচালনা করা হবে।’

চীন ওই বিমানবন্দর ব্যবহার করবে কি না, এ বিষয়ে নাজিম-উদ-দৌলা বলেন, এ–সংক্রান্ত কোনো তথ্য তাঁর কাছে নেই। তিনি মনে করেন, দেশের নিরাপত্তা বা স্বার্থ বিঘ্নিত হয়, এ রকম কোনো দেশকে অনুমতি দেওয়ার বা সম্পৃক্ত করার ব্যাপারে নিশ্চয়ই সরকার ভেবে দেখবে।

ভারত থেকে পুশ ইন গ্রহণযোগ্য নয়

ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. নাজিম বলেন, ‘পুশ ইনের বিষয়টি আমরা লক্ষ করছি। এটি কোনোভাবেই কাম্য নয়, গ্রহণযোগ্য নয়। পুশ ইন হতে থাকবে আর আমরা বসে থাকব, এটা ভাবার কোনো অবকাশ নেই। বিজিবি এটা নিয়ে কাজ করছে। সরকারের সংশ্লিষ্ট যাঁরা আছেন, তাঁরাও বিষয়টি নিয়ে অবগত আছেন।’

ব্রিগেডিয়ার নাজিম বলেন, আন্তর্জাতিক কনভেনশন অনুযায়ী সুনির্দিষ্ট একটি জায়গা পর্যন্ত সেনাবাহিনী যেতে পারে। তার বাইরে প্রয়োজন ছাড়া যেতে পারে না। এ পরিস্থিতিতে বিজিবি পুশ ইনের বিষয়টি সুন্দরভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে পারছে। পরিস্থিতির যদি উদ্ভব হয়, সেখানে সেনাবাহিনীর সম্পৃক্ত হওয়ার দরকার হয়, তাহলে সরকারের নির্দেশে সেনাবাহিনী সেখানে যাবে। কিন্তু এ মুহূর্তে বিজিবি এটি সুন্দরভাবে ‘ম্যানেজ’ করছে।

আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি

বিভিন্ন স্থানে ছিনতাইসহ আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অবনতির চিত্র দেখা যাচ্ছে। সেনাবাহিনী মাঠে থাকার পরও পরিস্থিতি কেন নিয়ন্ত্রণে আসছে না, এমন প্রশ্নের জবাবে কর্নেল মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘কেবল গণমাধ্যমে যে বিষয়গুলো আসছে, সেগুলোই আপনারা দেখতে পাচ্ছেন। তবে আইনশৃঙ্খলার সূচকগুলো ভালোভাবে বিশ্লেষণ করলে দেখবেন, বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি আগের চেয়ে স্থিতিশীল অবস্থায় আছে এবং কিছুটা ভালো হয়েছে। সেনাবাহিনী নিরলসভাবে দিনরাত কাজ করে যাচ্ছে। অন্যান্য সকল বাহিনী নিয়ে সম্মিলিত কাজের মাধ্যমে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি আরও উন্নত হবে বলে প্রত্যাশা করে সেনাবাহিনী।’

সেনা সদর জানায়, গত ৪০ দিনে সেনাবাহিনী ২৪১টি অবৈধ অস্ত্র ও ৭০৯টি গোলাবারুদ এবং গত আগস্ট থেকে এ পর্যন্ত সর্বমোট ৯ হাজার ৬১১টি অবৈধ অস্ত্র ও ২ লাখ ৮৫ হাজার ৭৬১টি গোলাবারুদ উদ্ধার করেছে। এ ছাড়া গত এক মাসে বিভিন্ন ধরনের অপরাধের সঙ্গে সম্পৃক্ত মোট ১ হাজার ৯৬৯ জনকে এবং এ পর্যন্ত সর্বমোট ১৪ হাজার ২৬৬ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। যাদের মধ্যে কিশোর গ্যাং, তালিকাভুক্ত অপরাধী, অপহরণকারী, চোরাচালানকারী, প্রতারক ও দালাল চক্র, চাঁদাবাজ, ডাকাত, ছিনতাইকারী ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য।

ঈদুল আজহার প্রস্তুতি

ঈদুল আজহার সময় ট্রাফিক ব্যবস্থাপনার বিষয়ে বলা হয়, ঈদুল আজহা উপলক্ষে ঘরমুখী মানুষের সর্বোচ্চ নিরাপত্তা ও সুশৃঙ্খল যানবাহন চলাচল নিশ্চিত করতে সেনাবাহিনী ঈদের আগে ও পরে মিলে দুই সপ্তাহের বিশেষ কার্যক্রম গ্রহণ করেছে। এর অংশ হিসেবে জাতীয় মহাসড়কগুলোয় নির্বিঘ্নে যান চলাচল নিশ্চিত করতে ঢাকাসহ দেশের গুরুত্বপূর্ণ বাসস্ট্যান্ড, রেলস্টেশন, লঞ্চ টার্মিনাল ও মহাসড়কে দিনরাত টহল পরিচালনা, গাড়ির অতিরিক্ত গতি নিয়ন্ত্রণের জন্য স্পর্শকাতর স্থানে চেকপোস্ট স্থাপনসহ টিকিট কালোবাজারি বা বেশি দামে টিকিট বিক্রি রোধ এবং জনগণের মধ্যে সচেতনতামূলক কার্যক্রম পরিচালনা করা হবে।

কোরবানির পশুর হাটকে কেন্দ্র করে চাঁদাবাজ ও ছিনতাইকারীদের দৌরাত্ম্য বৃদ্ধি পায়, মূল সড়কের পাশে পশুর হাটের অবস্থান হওয়ায় রাস্তাঘাটে যানজটের সৃষ্টি হয়। ফলে জনসাধারণের মধ্যে দুর্ভোগ ও জানমালের নিরাপত্তা হুমকি সৃষ্টি হয়। সেনাবাহিনী নিয়মিত টহল ও বিশেষ অভিযানের মাধ্যমে পশুর হাটে চাঁদাবাজি ও জননিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য সচেষ্ট থাকবে বলে ব্রিফিংয়ে বলা হয়। 

SHARE

Author: verified_user

0 comments: