Thursday, September 11, 2025

ডাকসুর ফলাফল কি ভবিষ্যৎ রাজনীতির জন্য বার্তা

ডাকসুর ফলাফল কি ভবিষ্যৎ রাজনীতির জন্য বার্তা

 


বিশেষ প্রতিনিধি


ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনে এক ঐতিহাসিক জয় পেয়েছে জামায়াতে ইসলামীর ছাত্রসংগঠন ইসলামী ছাত্রশিবির। 

এ বিজয়ে জামায়াতের রাজনীতিতে বা আগামী জাতীয় নির্বাচনে কোনো প্রভাব পড়বে কি না, এ নিয়ে আলোচনা তৈরি হয়েছে রাজনৈতিক অঙ্গনে। 

নির্বাচনে ভিপি, জিএস, এজিএসের পাশাপাশি ডাকসুর ২৮টি পদের মধ্যে ২৩টিতে ছাত্রশিবির–সমর্থিত প্যানেলের প্রার্থীরা জয়ী হন। 

অন্যদিকে এ নির্বাচনে বিএনপির ছাত্রসংগঠন ছাত্রদলের দুর্বল সাংগঠনিক অবস্থান প্রকাশ পেয়েছে, যা বিএনপির নেতৃত্বকে বিব্রত করেছে।

এখন ভোটের পর ফলাফল ধরে সব মহলেই নানামুখী বিচার-বিশ্লেষণ হচ্ছে যে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল বা বৈষম্যবিরোধী শিক্ষার্থী সংসদের প্রার্থীরা এত খারাপ করলেন কেন আর ছাত্রশিবির এত বড় বিজয় পেল কীভাবে।

এ বিষয়ে বুধবার বিএনপি ও জামায়াতের নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের পাঁচজন নেতাসহ বিভিন্ন দলের নয়জন গুরুত্বপূর্ণ নেতার সঙ্গে এই প্রতিবেদকের কথা হয়। তাঁদের নানা রকম পর্যবেক্ষণ রয়েছে। পাশাপাশি ডাকসুর ফলাফলকে ভবিষ্যৎ রাজনীতির জন্য বার্তা হিসেবেও দেখছেন তাঁরা।

বিএনপির নেতারা ডাকসু নির্বাচনে নিজেদের দুর্বলতা যেমন দেখেন, তেমনি প্রতিপক্ষ, অর্থাৎ বিজয়ীদের কৌশলও দেখেন।

 তাঁরা মনে করেন, ছাত্রশিবির যথেষ্ট প্রস্তুতি নিয়ে নির্বাচন করেছে। সে ধরনের প্রস্তুতিতে ছাত্রদলের যথেষ্ট ঘাটতি ছিল। ডাকসুতে ও হলে ছাত্রদলের পূর্ণাঙ্গ প্যানেল দেওয়ার মতো অবস্থা ছিল না।

বিগত আওয়ামী লীগের শাসনামলে ১৫-১৬ বছর ছাত্রদল ক্যাম্পাসে সংগঠন করতে পারেনি। অন্যদিকে ছাত্রশিবির পরিচয় গোপন করে অথবা ছাত্রলীগের পরিচয় ধারণ করে ক্যাম্পাসে ছিল।

বিএনপি নেতাদের অনেকে মনে করেন, ছাত্রশিবির নিষিদ্ধঘোষিত ছাত্রলীগের সমর্থন পেয়েছে। না হয় তারা এত ভোট পেল কীভাবে, সে প্রশ্ন তুলছেন তাঁরা। 

নির্বাচনে বিপুল অর্থ ব্যয়ের কথাও বলছেন কেউ কেউ। তবে নির্বাচনে ছাত্রদল যে খুব ভালো করবে না, সেটা বিএনপির শীর্ষ নেতৃত্ব আগেই কিছুটা আঁচ করেছিলেন।

জানা গেছে, গত মঙ্গলবার রাতে স্থায়ী কমিটির সভায় ডাকসু নির্বাচন নিয়ে নেতারা আলোচনা করেন। সেখানে ছাত্রদল যে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় বেশ পিছিয়ে, তা দলের শীর্ষ নেতৃত্ব অবহিত হন।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমার জানামতে, ছাত্রশিবির নামে কোনো সংগঠন ডাকসু নির্বাচনে অংশ নেয়নি। তারা ভিন্ন নামে বা মোর্চায় অংশ নিয়েছে।

এখন তারা নিজস্ব ক্যাপাসিটিতে, নাকি ছাত্রলীগের ভোট পেয়ে জয়ী হয়েছে, সেটা অ্যানালাইসিস করে আমাদের বের করে দেখতে হবে। তবু গণতন্ত্রের এই যাত্রায় আমরা বিজয়ীদের অভিনন্দন জানাই।’

জাতীয় নির্বাচনে প্রভাব পড়বে?

এদিকে প্রতিষ্ঠার ৪৮ বছর পর ডাকসু নির্বাচনে ছাত্রশিবিরের নিরঙ্কুশ সাফল্যে বেশ উচ্ছ্বসিত জামায়াতে ইসলামীর নেতারা। 

দলটির নেতারা বলছেন, ছাত্রশিবিরের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের ভোটের এত ব্যবধান হবে, সেটা তাঁরা ভাবেননি। 

বিশেষ করে ছাত্রীদের এত ভোট পাওয়া তাঁদের প্রত্যাশার বাইরে ছিল। নির্বাচনের এই ফলাফল জাতীয় নির্বাচনেও নিশ্চিত প্রভাব পড়বে বলে মনে করছেন জামায়াতের নেতারা। 

তাঁদের মতে, এই নির্বাচনে রাজনীতিবিদদের জন্য একধরনের সতর্কবাণী এবং দিকনির্দেশনাও আছে। সেটি হচ্ছে পুরোনো রাজনৈতিক চর্চা আর গ্রহণযোগ্য হবে না।

জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের প্রথম আলোকে বলেন, ‘বর্তমান যুবসমাজ ও ছাত্রসমাজ নীতিহীন ও ধ্বংসাত্মক রাজনীতির বিরুদ্ধে। 

তারা পুরোনো রাজনৈতিক চর্চা পছন্দ করছে না। তারা গঠনমূলক, মেধাভিত্তিক, একাডেমিক রাজনীতি চায়। 

তারা বাংলাদেশে একটা ইতিবাচক পরিবর্তন চায়। ডাকসুর নির্বাচনে ছাত্ররা রাজনৈতিক দলগুলোকে সেই বার্তাই দিয়েছে বলে আমরা মনে করি।’

সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এবারের ডাকসু নির্বাচনকে দলীয়ভাবে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে কর্মপরিকল্পনা করে জামায়াত। 

এর জন্য দলের নায়েবে আমির সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহেরকে সমন্বয়ের দায়িত্ব দেওয়া হয়। ভোটের দিন সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত দলের সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ারসহ জ্যেষ্ঠ নেতারা পুরানা পল্টনে জামায়াতের ঢাকা মহানগর কার্যালয়ে থেকে নির্বাচন পরিস্থিতির ওপর নজর রাখেন।

ফল ঘোষণার সময় সিনেট ভবনে উল্লসিত ছাত্রশিবিরের সাদিক কায়েম, এস এম ফরহাদ ও মুহা. মহিউদ্দীন খান (বাঁ থেকে)। তাঁরা ভিপি, জিএস ও এজিএস পদে নির্বাচিত হয়েছেন। আজ বুধবার সকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে

ফল ঘোষণার সময় সিনেট ভবনে উল্লসিত ছাত্রশিবিরের সাদিক কায়েম, এস এম ফরহাদ ও মুহা. মহিউদ্দীন খান (বাঁ থেকে)। তাঁরা ভিপি, জিএস ও এজিএস পদে নির্বাচিত হয়েছেন। আজ বুধবার সকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে

জেন–জিদের ভাবনার প্রতিফলন

এবারের ডাকসু নির্বাচনে প্রশাসনিক কারসাজিসহ নানা অভিযোগ নিয়ে প্রশ্ন তোলেন বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পাটির (সিপিবি) সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স। তবে তিনি শিক্ষার্থীদের রায়ের প্রতি সম্মান জানিয়ে প্রথম আলোকে বলেন,‘ গণ-অভ্যুত্থান-উত্তর তরুণ প্রজন্ম কী চিন্তাচেতনায় কোন দিকে এগোচ্ছে, সেটাকে বিবেচনা করে আমাদের ভবিষ্যৎ পদক্ষেপ নিতে হবে।’

অবশ্য এবারের ডাকসুর নির্বাচনকে একটি শান্তিপূর্ণ ও উৎসবমুখর ‘চমৎকার’ নির্বাচন বলছে প্রায় সব রাজনৈতিক দল। সে কারণে অনেকে মনে করেন, মতের ভিন্নতা থাকলেও সবার উচিত অতীত সংস্কৃতি থেকে বেরিয়ে বিজয়ীদের অভিনন্দন জানানো।
এ বিষয়ে নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না প্রথম আলোকে বলেন, ভোট সুষ্ঠু হয়নি, গণনায় কারচুপি হয়েছে; এটা বলা যাবে না। ফলাফল মানতে হবে, সবার মানা উচিত।

তবে এই নির্বাচনে তরুণেরা, যাঁদের ‘জেন–জি’ বলা হয়, তাঁরা রাজনীতি ও রাষ্ট্র নিয়ে কী ভাবছেন, তার একটি প্রতিফলন ঘটেছে, যা রাজনৈতিক দলগুলো বিবেচনায় নেয়নি বলে মনে করেন মাহমুদুর রহমান মান্না।

ফ্যাসিবাদী শাসনের ফল

রাজনৈতিক দলগুলোর নেতাদের অনেকে মনে করছেন, ছাত্রশিবিরের বিরাট বিজয় বিগত সময়ে জামায়াত ও ছাত্রশিবিরের নেতা-কর্মীদের ওপর নিপীড়ন এবং আওয়ামী লীগ সরকারের ফ্যাসিবাদী শাসনের ফল। আওয়ামী লীগ তার দীর্ঘ শাসনামলে জামায়াত-শিবিরকে নিষিদ্ধ ও গুপ্তসংগঠনে পরিণত করেছিল। এই সুযোগে তারা প্রকাশ্যে ও অপ্রকাশ্যে সংগঠন শক্তিশালী করেছে। ছাত্রলীগ সাজার কৌশলও অবলম্বন করেছিল।

গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকী প্রথম আলোকে বলেন, আওয়ামী লীগ মুক্তিযুদ্ধ ও রাজাকারের বিভাজন দিয়ে রাজনীতি করার চেষ্টা করেছে। তাদের ফ্যাসিবাদী শাসন জামায়াতকে দিয়ে জায়েজ করতে চেয়েছে। তখন কার্যত জামায়াত নিষিদ্ধ সংগঠন ছিল। একদিকে তারা নিপীড়িত হিসেবে সহানুভূতির জায়গা পেয়েছে, অন্যদিকে অপ্রকাশ্যে কাজ করার অভিজ্ঞতা তৈরি হয়েছে। এখন সেটার সুবিধা তাদের কাছে গেছে।

ডাকসু নির্বাচনে চব্বিশের গণ-অভ্যুত্থানের নেতৃত্বে থাকা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাদের একাংশের গড়া গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদের নেতারাও খুব কম ভোট পেয়েছে। কেন এমন হলো, তা নিয়েও নানা আলোচনা চলছে। অনেকে বলছেন, গত এক বছরে নানা বক্তব্য ও কর্মকাণ্ডের কারণে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাদের কেউ কেউ সমালোচনার মুখে পড়েছেন। সে জায়গায় ছাত্রশিবির ছিল নমনীয় ও সতর্ক। যার ফলশ্রুতিতে আন্দোলনের সূতিকাগার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এর ফল তুলে নিয়েছে ছাত্রশিবির।

সচেতন শিক্ষার্থী সংসদ নামে ইসলামী ছাত্র আন্দোলনও ডাকসু নির্বাচনে অংশ নিয়েছে। এটি চরমোনাইয়ের পীরের দল ইসলামী আন্দোলনের ছাত্রসংগঠন। ইসলামী আন্দোলনের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব গাজী আতাউর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, ‘এ নির্বাচনে জুলাই চেতনার সঠিক প্রতিফলন হয়েছে। আমরা আশা করি, বিজয়ের এ ধারা অব্যাহত থাকবে।

সতর্কতার বার্তা নির্বাচনে

ছাত্রদলের খারাপ ফলাফলের বিষয়ে বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের আমির মাওলানা মামুনুল হকের পর্যবেক্ষণ ভিন্ন। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, চব্বিশের গণ-অভ্যুত্থানের প্রতি যে আবেগ, ছাত্রদল সেটা ধরতে পারেনি। তারা ছাত্রলীগের পুরোনো বয়ান (মুক্তিযুদ্ধে পক্ষ-বিপক্ষ) নিয়ে হাজির হয়েছে। কিন্তু এ প্রজন্ম কাউকে রাজাকার গালি আর শুনতে চায় না। তারা গঠনমূলক রাজনীতি, মেধাভিত্তিক রাজনীতির চর্চা চায়। ছাত্রদল এই পুরোনো ধারা থেকে বের হতে না পারলে বাংলাদেশে তাদের রাজনীতি করা কঠিন হয়ে যেতে পারে।

ডাকসু নির্বাচনের এই ফলাফল ভবিষ্যৎ রাজনীতির জন্য একটা বার্তা বলেও মনে করছেন রাজনীতিকদের কেউ কেউ। তাঁদের মতে, এখান থেকে শিক্ষা নেওয়ার বিষয় আছে। বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়ের মতে, ‘এই নির্বাচন থেকে ভবিষ্যৎ পথচলার ব্যাপারে আমাদের সতর্ক হওয়ার সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। এর মধ্য দিয়ে আমাদের আত্মবিশ্বাসের মাত্রা যাচাইয়ের সুযোগও হলো।

ডাকসুতে জয় পেলেন সাত নারী

ডাকসুতে জয় পেলেন সাত নারী

 


উপরে বাঁ থেকে সানজিদা আহমেদ তন্বি (স্বতন্ত্র), ফাতেমা তাসনিম জুমা (শিবিরের প্যানেল), উম্মে ছালমা (শিবিরের প্যানেল); নিচে বাঁ থেকে সাবিকুন নাহার তামান্না (শিবিরের প্যানেল), মোছা. আফসানা আক্তার (শিবিরের প্যানেল), হেমা চাকমা (প্রতিরোধ পর্ষদ), উম্মা উসওয়াতুন রাফিয়া (স্বতন্ত্র শিক্ষার্থী ঐক্য প্যানেল)

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনে মোট ২৮টি পদে ৭ নারী শিক্ষার্থী জয়ী হয়েছেন। এর মধ্যে ১২টি সম্পাদকীয় পদের মধ্যে ৩টি পদে জিতেছেন নারী শিক্ষার্থীরা। আর ১৩টি সদস্য পদের মধ্যে নারী শিক্ষার্থীরা জিতেছেন ৪টি পদে।

ডাকসু নির্বাচনের প্রধান রিটার্নিং কর্মকর্তা অধ্যাপক মোহাম্মদ জসীম উদ্দিন জানিয়েছেন, ভোটারের সংখ্যা ছিল ৩৯ হাজার ৮৭৪। ভোট দিয়েছেন ২৯ হাজার ৮২১ জন। এর মধ্যে ১২ হাজার ৪৫৩ জন নারী ভোট দিয়েছেন। ভোট গ্রহণের হার ৭৪ দশমিক ৭৮ শতাংশ।

ভোট গ্রহণ হয়েছে অপটিক্যাল মার্ক রিকগনিশন (ওএমআর) শিটে। ডাকসু (২৮টি পদ) ও হল সংসদ (১৩টি) মিলিয়ে নির্বাচনে একজন ভোটারকে মোট ৪১টি ভোট দিতে হয়েছে। ডাকসু ও হল সংসদ নির্বাচনে মোট ৬২ জন নারী প্রার্থী ভোট পেয়েছেন ১ লাখ ৩৩ হাজার ১০৫।

এ ছাড়া হল সংসদ নির্বাচনে পাঁচ ছাত্রী হল সংসদে ৬৫টি পদে প্রার্থী ছিলেন ১৮৫ জন নারী। ডাকসু ও হল সংসদ মিলিয়ে জয়ী হয়েছেন ৭২ জন নারী।

গতকাল মঙ্গলবার সকাল আটটা থেকে বিকেল চারটা পর্যন্ত ডাকসু ও হল সংসদ নির্বাচনের ভোট গ্রহণ হয়। আজ বুধবার সকালে চূড়ান্ত ফলাফল ঘোষণা করা হয়। ডাকসুর মোট ২৮টি পদের ২৩টিতেই জিতেছে জামায়াতে ইসলামীর ছাত্রসংগঠন ইসলামী ছাত্রশিবিরের প্যানেল ঐক্যবদ্ধ শিক্ষার্থী জোট। সহসভাপতি (ভিপি), সাধারণ সম্পাদক (জিএস) ও সহসাধারণ সম্পাদক (এজিএস)—শীর্ষ এই তিন পদেই জিতেছে শিবিরের প্যানেল ঐক্যবদ্ধ শিক্ষার্থী জোট। এই তিন পদে নারীরা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করলেও জয়ী হতে পারেননি।

সম্পাদকীয় পদের মধ্যে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে গবেষণা ও প্রকাশনা সম্পাদক পদে নির্বাচিত হয়েছেন সানজিদা আহমেদ তন্বি। তাঁর প্রাপ্ত ভোট ১১ হাজার ৭৭৮। তাঁকে সমর্থন জানিয়ে ছাত্রদলসহ কয়েকটি প্যানেল এই পদে প্রার্থী দেয়নি। তাঁর সঙ্গে মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতা হয়েছে শিবিরের প্রার্থীর। শিবিরের প্রার্থী মো. সাজ্জাদ হোসাইন খান ৭ হাজার ১৮৯ ভোট পেয়ে দ্বিতীয় হয়েছেন।

মুক্তিযুদ্ধ ও গণতান্ত্রিক আন্দোলন সম্পাদক পদে শিবিরের প্যানেলের প্রার্থী ফাতেমা তাসনিম জুমা ১০ হাজার ৬৩১ ভোট পেয়ে জয়ী হয়েছেন। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছাত্রদলের আরিফুল ইসলাম পেয়েছেন ২ হাজার ৪৭০ ভোট। কমনরুম, রিডিংরুম ও ক্যাফেটেরিয়া সম্পাদক পদে ৯ হাজার ৯২০ ভোট পেয়ে শিবিরের প্যানেলের প্রার্থী উম্মে ছালমা জয়ী হয়েছেন। ৪ হাজার ৪৮২ ভোট পেয়ে দ্বিতীয় হয়েছেন স্বতন্ত্র শিক্ষার্থী ঐক্য প্যানেলের সুর্মী চাকমা।

সদস্য পদে জয়ী ৪ নারী হলেন শিবির প্যানেলের সাবিকুন নাহার তামান্না (১০ হাজার ৮৪ ভোট) ও মোছা. আফসানা আক্তার (৫ হাজার ৭৪৭ ভোট), প্রতিরোধ পর্ষদের হেমা চাকমা (৪ হাজার ৯০৮ ভোট) এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী উম্মা উসওয়াতুন রাফিয়া (৪ হাজার ২০৯ ভোট)।

এবার ডাকসুতে ৪৭১ প্রার্থীর মধ্যে নারী ছিলেন ৬২ জন, যা মোট প্রার্থীর ১৩ শতাংশ। সংখ্যালঘু সম্প্রদায় ও ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর প্রার্থী ছিলেন ১৮ জন, যা মোট প্রার্থীর মাত্র ৩ দশমিক ৮২ শতাংশ। তাঁদের মধ্যে দুজন নির্বাচিত হয়েছেন। আর পাঁচ ছাত্রী হল সংসদে ৬৫টি পদে প্রার্থী ছিলেন ১৮৫ জন। এর মধ্যে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ছিলেন ১৪ জন।

ডাকসু নির্বাচনে কার্যকরী সদস্য পদে নির্বাচিত বামপন্থী সাতটি সংগঠনের প্যানেল ‘প্রতিরোধ পর্ষদ’–এর প্রার্থী হেমা চাকমা প্রথম আলোকে বলেন, ‘নির্বাচনে জিতব ভাবিনি। মুক্তিযুদ্ধে চাকমাদের অবদান নেই, এমন বক্তব্যের সমালোচনা বা প্রতিবাদ করতে গিয়ে পরবর্তী সময়ে আমার বিরুদ্ধে আক্রমণ শুরু হয়। শিবিরের প্যানেলের এক প্রার্থী পাহাড়িদের বিরুদ্ধে এমন অপপ্রচার চালিয়েছিলেন। এর সমালোচনা করে আমি সংবাদ সম্মেলন করেছিলাম। এরপর আমার পোস্টার ছিঁড়ে ফেলা হয়, আর সাইবারজগতে প্রতিনিয়ত বুলিংয়ের শিকার হয়েছি।’

নির্বাচনে গবেষণা ও প্রকাশনা সম্পাদক পদে বিপুল ভোটে জয়ী জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে আহত সানজিদা আহমেদ তন্বি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে তাঁর প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন। তিনি গতকাল ফেসবুকে দেওয়া এক পোস্টে বলেছেন, ভোটারদের আস্থার মর্যাদা দেওয়ার সর্বোচ্চ চেষ্টা তিনি করবেন।

Thursday, September 4, 2025

সাভার পৌরসভার ৮ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর নির্বাচন করতে চান মোঃ মেহেদী হাসান

সাভার পৌরসভার ৮ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর নির্বাচন করতে চান মোঃ মেহেদী হাসান

 

আনোয়ার হোসেন আন্নু বিশেষ প্রতিনিধি

সাভার পৌরসভার ৮নং ওয়ার্ডে এক নবজাগরণের নাম হয়ে উঠছেন বর্তমানে সাভার দলিল লেখক সাব-রেজিস্ট্রি ও সাধারণ সম্পাদক ও মোঃ মেহেদী হাসান। দীর্ঘদিন ধরে সাধারণ মানুষের পাশে থেকে নিরলসভাবে কাজ করে যাওয়া এই মানুষটি শুধু একটি নাম নয়—তিনি আজ গণমানুষের ভালোবাসা ও বিশ্বাসের প্রতীক।   জনসেবা, ন্যায়বিচার এবং সমাজ পরিবর্তনের দৃঢ় অঙ্গীকার নিয়ে যিনি এগিয়ে এসেছেন, সেই ব্যক্তি মোঃ মেহেদী হাসান। একাত্তরের চেতনায় বিশ্বাসী এই সাহসী যোদ্ধা শুধু নিজের স্বপ্ন নয়, বহন করছেন তারুণ্যের আশা ও সাধারণ মানুষের আকাঙ্ক্ষা। তিনি বলেন, “জনসেবা ও ন্যায়ের ভিত্তিতে সমাজ গঠনই আমার মূল লক্ষ্য, আর সেই লক্ষ্যেই আমি পথ চলছি নিরন্তর।”   আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে দলের প্রতি নিষ্ঠা এবং একাগ্রতার কারণে নানা সময় তাকে বিভিন্নভাবে নির্যাতিত হতে হয়েছে। রাজনৈতিক প্রতিহিংসা, হামলা-মামলা ও নানা বাধা সত্ত্বেও তিনি কখনো পিছু হটেননি। বরং দলের জন্য থেকে গেছেন একনিষ্ঠ কর্মী হিসেবে, এবং মাটি ও মানুষের সঙ্গে লেগে থেকে কাজ করে গেছেন নিরলসভাবে।   ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের অশুভ চক্রান্তের সময়ও তিনি ছিলেন সাহসী এক মুখ। দলের দুঃসময়ে তার মতো কর্মীরাই ছিলেন বিএনপি’র রক্ষাকবচ। আজ সেই ত্যাগী কর্মীকেই ৮ নং ওয়ার্ডবাসী কাউন্সিলর হিসেবে দেখতে চায়।   মাদক, সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি ও দুর্নীতিমুক্ত একটি আধুনিক সাভার গড়তে তিনি চান সবার সহযোগিতা। তরুণদের জন্য কর্মসংস্থান, গরিব-দুঃখীদের জন্য সাহায্য, রাস্তা-ঘাট ও নালার উন্নয়ন, এবং সমাজে ন্যায়ের শাসন প্রতিষ্ঠা—এই অঙ্গীকারই তার রাজনীতির মূল দর্শন।   তিনি বলেন, “আমি রাজনীতি করি মানুষের কল্যাণে, পদ-পদবীর জন্য নয়। যদি সুযোগ পাই, সাভার পৌরসভার ৮ নং ওয়ার্ডকে একটি মডেল ওয়ার্ডে রূপান্তর করব ইনশাআল্লাহ।”   আজ সাভারবাসী একটি প্রশ্নই রাখছে—যে মানুষটি সব সময় পাশে থেকেছেন, দিনরাত কাজ করেছেন, রাজনীতিতে নিষ্ঠা ও সততার প্রতীক, তিনি কেন জনপ্রতিনিধি হবেন না?   তাই সময় এসেছে সঠিক মানুষকে নেতৃত্বে আনার। ৮ নং ওয়ার্ডে উন্নয়ন ও জনসেবার নতুন দিগন্ত উন্মোচনের জন্য মোঃ মেহেদী হাসান কাউন্সিলর হিসেবে নির্বাচিত করাই এখন সময়ের দাবি।

সাভারের বিএনপির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে দুস্থ পরিবারের অসুস্থদের আর্থিক সহায়তা করে খোরশেদ আলম

সাভারের বিএনপির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে দুস্থ পরিবারের অসুস্থদের আর্থিক সহায়তা করে খোরশেদ আলম


আনোয়ার হোসেন আন্নু বিশেষ প্রতিনিধি

সাভারের বিএনপির ৪৭ তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে দুস্থ ও অসহায় পরিবারের অসুস্থ সদস্যদের চিকিৎসার জন্য আর্থিক সহায়তা প্রদান করেন ঢাকা জেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সাবেক কাউন্সিলর ও সাভার পৌরসভা মেয়র প্রার্থী মোঃ খোরশেদ আলম। সোমবার (১ সেপ্টেম্বর) সকালে সাভার পৌরসভা ৩ নং ওয়ার্ডে এলাকার ছায়াবীথির নিজ বাসভবনে আয়োজিত অনুষ্ঠানে এ আর্থিক সহায়তা প্রদান করেন তিনি। বিএনপি নেতা খোরশেদ আলম বলেন, স্বাধীনতার ঘোষক শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান রাষ্ট্রক্ষমতায় আসীন হয়েই দেশের চলমান অবনতিশীল আইন শৃংখলা পরিস্থিতির উন্নতি করেন। শক্তহাতে চুরি, ডাকাতি ও দুর্নীতির লাগাম টেনে ধরেন। অল্প কিছুদিনের মধ্যেই জনমনে স্বস্তি ফিরে আসে। দল হিসেবে বিএনপি বাংলাদেশের সেরা। বিএনপি যদি এই ঐতিহাসিক দায়িত্ব পালন করে, তাহলে আগামী দিনগুলোতে বিএনপি দেশের জন্য অনেক অবদান রাখতে সক্ষম হবে।


তিনি আরো বলেন, এক সময় সাভারে বিএনপি করার মতো কোনো লোক ছিল না। বিএনপির নির্যাতিত কর্মীরাসহ সাভারের সাধারণ মানুষ গুলোও আমার সঙ্গেই রয়েছে। আমি সাভারে মানুষের কথা ভাবি এবং তাদেরকে সাথে নিয়েই কিছু করতে চাই। আমি সাভার পৌরসভাকে পরিকল্পিত একটি সুন্দর সাভার উপহার দিতে চাই।

সাভার পৌর বিএনপির সহ-সভাপতি আব্দুল গফুর বাবুলের সভাপতিত্বে এসময় উপস্থিত ছিলেন পৌর ১নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর প্রার্থী মনিবুর রহমান চম্পক, ২নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর প্রার্থী ইয়ার রহমান উজ্জ্বল, ৩নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর প্রার্থী রাশেদুজ্জামান বাচ্চু, ৭নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর প্রার্থী ইউনুস খান, ৮নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর প্রার্থী মোশাররফ হোসেন মোল্লা, পাথালিয়া ইউনিয়ন বিএনপির সহ-সভাপতি হযরত আলী, পৌর বিএনপি নেতা খান মজলিশ বাবু ও পৌর ছাত্রদল নেতা তাজ খান নাঈমসহ বিএনপির অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের বিভিন্ন নেতাকর্মীরা।

Wednesday, August 27, 2025

সাভারের গলায় ফাঁস দিয়ে প্রবাসীর স্ত্রীর আত্মহত্যা করে

সাভারের গলায় ফাঁস দিয়ে প্রবাসীর স্ত্রীর আত্মহত্যা করে

 


আনোয়ার হোসেন আন্নু বিশেষ প্রতিনিধি   ঢাকার সাভারে নীলা বেগম (২৪) নামে এক প্রবাসীর স্ত্রী গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে। মঙ্গলবার (২৬ আগস্ট) বিকেলে পৌরসভার সোবহানবাগ এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। তিনি ওই এলাকার রাজু আহমেদের বাড়ির ভাড়াটিয়া সৌদি প্রবাসী হাসিব হোসেনের স্ত্রী। স্থানীয়রা জানান, প্রবাসী স্বামী হাসিব হোসেনের সঙ্গে অভিমান করে আজ বিকেলে নিজ ঘরের ফ্যানের সঙ্গে ওড়না পেঁচিয়ে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেন স্ত্রী নীলা বেগম। পরে জাতীয় জরুরি সেবা নম্বর ‘৯৯৯’–এ ফোন পেয়ে সন্ধ্যারাতে ঘটনাস্থলে পৌঁছে নিহতের মরদেহ উদ্ধার করে সাভার মডেল থানা পুলিশ। বিষয়টি নিশ্চিত করে সাভার মডেল থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) আলম জানান, স্থানীয়দের সহায়তায় দরজা ভেঙে ঘরের বৈদ্যুতিক পাখার (ফ্যান) সঙ্গে ওড়না পেঁচিয়ে গলায় ফাঁস দেওয়া প্রবাসীর স্ত্রীর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করা হয়। পরে প্রাথমিক সুরতহাল শেষে পরিবারের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ময়নাতদন্ত ছাড়াই স্বজনদের কাছে লাশ হস্তান্তর করা হয়। এ ঘটনায় থানায় একটি অপমৃত্যুর (ইউডি) মামলা হয়েছে।

Saturday, August 16, 2025

সাভার পৌরসভার ১ নং ওয়ার্ডের খালেদা জিয়ার ৮০তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে দোয়া মাহফিল

সাভার পৌরসভার ১ নং ওয়ার্ডের খালেদা জিয়ার ৮০তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে দোয়া মাহফিল

 



আনোয়ার হোসেন আন্নু বিশেষ প্রতিনিধি

ঢাকার সাভারে সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার ৮০তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে তার আরোগ্য, দীর্ঘায়ু ও সুস্থতা কামনায় মিলাদ ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়েছে। শনিবার (১৬ আগস্ট) দুপুরে সাভার পৌর এলাকার বাড্ডা আঃ গফুর ইসলামিয়া মাদরাসা ও ইয়াতীমখানায় এ মিলাদ ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা জেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও সাভার পৌরসভা মেয়র প্রার্থী লায়ন মোঃ খোরশেদ আলম।

স্থানীয় সাবেক মেম্বার আতাউর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন, সাভার পৌর বিএনপির সহ-সভাপতি আব্দুল গফুর, পৌর বিএনপির যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক রমিজ উদ্দিন রমিজ, পৌর ১নং ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি আশেক আলী মোল্লা, সাধারণ সম্পাদক আকতার হোসেন বেপারী, প্রার্থী মনিবুর হরমান চম্পক, প্রার্থী রাশেদুজ্জামান বাচ্চু, পাথালিয়া ইউনিয়ন বিএনপির সহ-সভাপতি হযরত আলী, পৌর বিএনপি নেতা খান মজলিশ বাবু, বিএনপি নেতা গিয়াস উদ্দিন, ইসমাইল মোল্লাসহ বিএনপি ও এর সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা। প্রধান অতিথির বক্তব্যে মোঃ খোরশেদ আলম বেগম খালেদা জিয়ার দীর্ঘ জীবন ও সুস্থতা কামনা করে বলেন, বেগম খালেদা জিয়া শুধু একজন রাজনীতিবিদ নন, তিনি দেশের মানুষের কাছে গণতন্ত্রের প্রতীক। তাঁর অবদান দেশের মানুষ চিরকাল মনে রাখবে।

খালেদা জিয়া দেশের গণতন্ত্র ও জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবন উৎসর্গ করেছেন। রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে তিনি আজ অসুস্থ হয়ে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। অনুষ্ঠানের শেষে দেশ নেত্রীর সুস্থতা, দেশের শান্তি ও সমৃদ্ধি কামনায় বিশেষ মোনাজাত করা হয় এবং উপস্থিতদের মাঝে তবারক বিতরণ করা হয়।

Thursday, August 14, 2025

 





আনোয়ার হোসেন আন্নু বিশেষ প্রতিনিধি

আশুলিয়ায় বেসরকারি টেলিভিশন ৭১টিভির আশুলিয়া প্রতিনিধি জাহিদুল ইসলাম অনিক কে অপহরণ ও হত্যা চেষ্টার ঘটনা ঘটেছে। ঘটনাস্থল থেকে দুজনকে আটক করে থানায় হস্তান্তর করেছে স্থানীয়রা। মঙ্গলবার (১২ই আগস্ট) সকালে আসামী দুজনকে আদালতে পাঠানোর বিষয়ে নিশ্চিত করে আশুলিয়া থানার পরিদর্শক (অপারেশন) সফিকুল ইসলাম । এর আগে সোমবার রাত সাড়ে দশটার দিকে আশুলিয়ার বাইপাইলে এঘটনা ঘটে। ভুক্তভোগী সাংবাদিক জাহিদুল ইসলাম অনিককে উদ্ধার করে প্রথমে ধামরাই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স নেওয়া হয়। পরে তাকে স্থানীয় একটি ক্লিনিকে ভর্তি করা হয়েছে। হামলার শিকার ৭১ টেলিভিশনের আশুলিয়া প্রতিনিধি জাহিদুল ইসলাম অনিক বলেন, গত কাল রাতে একটি অনুসন্ধান শেষ করে একটি চায়ের দোকানে যাচ্ছিলাম। সেখানে আগে থেকে দুজন মোটরসাইকেল নিয়ে অপেক্ষা করছিলেন। পরে  সেখান থেকে বাসায় উদ্দেশ্যে রওনা হলে তারা মোটরসাইকেল নিয়ে আমার পিছু নেয়। আমি বাইপাইল বাসস্ট্যান্ড এসে পৌছলে তাদের আরও একটি প্রাইভেটকারে চার জনকে দেখা যায়। কোন কিছু বুঝে উঠার আগেই দেশী অস্ত্র নিয়ে আমার উপর হামলা চালায় ও প্রাইভেটকারে উঠিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে। স্থানীয়রা এগিয়ে আসলে সবাই পালিয়ে যায়। সেসময় দুজনকে আটক করে থানায় খবর দেয় স্থানীয়রা। জাহিদুল ইসলাম অনিক আরও বলেন,  আমার অনুসন্ধান ছিলো ফার্মেসি নামের আড়ালে মাদক দ্রব্য সরবরাহ ও বিক্রি নিয়ে। এই নিয়ে তারা আমাকে টার্গেট রাখে। তারা জানতো আমি কাজ শেষে আশুলিয়ার পল্লীবিদ্যুৎ এলাকায় যাবো। তাদের পরিকল্পনা ছিল যেকোন ভাবে অপ্রীতিকর পরিস্থিতি তৈরি করে আমাকে অপহরণ করা। সেসময় তাদের পরিকল্পনা বুঝতে পেরে ওই স্থান ত্যাগ করি। কিন্ত তারা পিছু নেয় এবং তাদের পূর্ব পরিকল্পনার অনুযায়ী আগে থেকেই দেশীয় অস্ত্র ও প্রাইভেটকার নিয়ে বাইপাইল আমার বাসায় যাওয়ার সড়কে অবস্থান নিয়ে রাখে। তারা চেষ্টা করেছে গাড়িতে উঠিয়ে নেওয়ার। একজন দাড়ালো অস্ত্র দিয়ে মারার চেষ্টা করেছে। কিন্ত আঘাত লাগেনি। এছাড়া মারধর করেছে বাকীরা। সেসময় স্থানীয়রা এগিয়ে আসলে প্রাইভেটকার নিয়ে চারজন পালিয়ে যায়। বাকী দুজন মোটরসাইকেল স্ট্যার্ট না হওয়ায় পালিয়ে যেতে পারেনি। পরে তাদের আটক করে পুলিশে খবর দেয়। আহত সাংবাদিক কে  উদ্ধার করে প্রথমে ধামরাই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে স্থানীয় একটা ক্লিনিকে ভর্তি করা হয়েছে। আশুলিয়া থানার পরিদর্শক (অপারেশন) সফিকুল ইসলাম  জানান,  ঘটনার সংবাদ পাওয়ার পর পর কয়েকটি টীম ঘটনাস্থলে পাঠিয়েছে। দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বাকিদের গ্রেপ্তারের জন্য অভিযান অব্যাহত রয়েছে।