Tuesday, June 24, 2025

আদালতে জবানবন্দি দিতে গিয়ে সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) নূরুল হুদা স্বীকার করেছেন ২০১৮ সালের নির্বাচন বিতর্কিত হয়ে পড়েছিল।

আদালতে জবানবন্দি দিতে গিয়ে সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) নূরুল হুদা স্বীকার করেছেন ২০১৮ সালের নির্বাচন বিতর্কিত হয়ে পড়েছিল।

 



নিজস্ব প্রতিবেদক


প্রায় এক ঘণ্টা কাঠগড়ায় বিমর্ষ হয়ে মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে ছিলেন সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নূরুল হুদা। আজ সোমবার বিকেলে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) মুস্তাফিজুর রহমান কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে থাকা নূরুল হুদার কাছে জানতে চান, তিনি শপথ ভঙ্গ করেছেন কি না?

জবাবে নূরুল হুদা আদালতকে বলেন, ‘মাননীয় আদালত, আমি কোনো শপথ ভঙ্গ করিনি। একটি নির্বাচন কমিশন গঠিত হয় পাঁচজনকে দিয়ে। একজন প্রধান নির্বাচন কমিশনার থাকেন, বাকি চারজন থাকেন নির্বাচন কমিশনার। একটি জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নির্বাচন কমিশনের তত্ত্বাবধায়নে ১৭ লাখ কর্মকর্তা–কর্মচারী কাজ করেন। একটি জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রত্যন্ত অঞ্চলের কোনো গ্রামের ভোটসংক্রান্ত সব তথ্য ঢাকায় বসে জানা সম্ভব নয়। প্রতিটি ভোটকেন্দ্র মনিটরিং করার কোনো সুযোগ থাকে না।’

এ পর্যায়ে সিএমএম সাবেক সিইসি নূরুল হুদার উদ্দেশে বলেন, নির্বাচন কমিশনের দায়িত্ব ফেয়ার নির্বাচন করা? তখন নূরুল হুদা আদালতকে বলেন, ‘মাননীয় আদালত, নির্বাচন কমিশনের দায়িত্ব সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজন করা। তবে নির্বাচন সুষ্ঠু করার জন্য অনেক স্টেকহোল্ডার জড়িত থাকে। নির্বাচন আয়োজনের পর রিটার্নিং কর্মকর্তা গেজেট প্রকাশের পর নির্বাচন কমিশনের আর কিছুই করার থাকে না। বিষয়টি উচ্চ আদালতের ওপর ন্যস্ত থাকে।’

এ পর্যায়ে সিএমএম নূরুল হুদার উদ্দেশে বলেন, নির্বাচনের শিডিউল (তফসিল) ঘোষণার পর নির্বাচন কমিশনের দায়িত্ব কী? জবাবে নূরুল হুদা বলেন, ‘গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ অনুযায়ী, নির্বাচনের পর গেজেট হলে নির্বাচন কমিশনের আর কোনো ক্ষমতা থাকে না।

এ পর্যায়ে সিএমএম সাবেক এই সিইসির কাছে নির্বাচনের আগে তৎকালীন আইজিপির (পুলিশের মহাপরিদর্শক) ভূমিকা জানতে চান। জবাবে নূরুল হুদা আদালতকে বলেন, ‘২০১৮ সালে নির্বাচনের আগে সাবেক আইজিপি আইনশৃঙ্খলার বিষয়টি মনিটরিং করেছিলেন। যে কারণে ওই নির্বাচনে সহিংসতার ঘটনা ঘটেনি।’

একপর্যায়ে আত্মপক্ষ সমর্থন করতে গিয়ে নূরুল হুদা আদালতকে বলেন, ‘মাননীয় আদালত, ২০১৮ সালের নির্বাচন বিতর্কিত হয়েছে। সেই বিতর্কের দায় নির্বাচন কমিশনের নয়।’

নূরুল হুদার বক্তব্যের পর তাঁর আরেক আইনজীবী ওবায়দুল ইসলাম আদালতকে বলেন, ‘মাননীয় আদালত, উনি একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা। উনি পটুয়াখালীতে মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়েছিলেন। তিনি ভীষণ অসুস্থ। তাঁর ডায়াবেটিস রয়েছে।’

নূরুল হুদাসহ আওয়ামী লীগ আমলের সাবেক তিন প্রধান নির্বাচন কমিশনারের বিরুদ্ধে প্রহসনের নির্বাচন করার অভিযোগে গতকাল রাজধানীর শেরেবাংলা নগর থানায় একটি মামলা দায়ের করে বিএনপি। দুপুরে ওই মামলা হওয়ার পর সন্ধ্যায় একদল লোক ‘মব’ তৈরি করে নূরুল হুদার উত্তরার বাসা থেকে তাঁকে ধরে এনে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করার পর পুলিশে সোপর্দ করে। আজ পুলিশ ওই মামলায় নূরুল হুদাকে আদালতে হাজির করে ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করে। উভয় পক্ষের শুনানি নিয়ে আদালত নূরুল হুদার চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

আদালতের কাঠগড়ায় নূরুল হুদার এক ঘণ্টা

সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ কে এম নূরুল হুদার দুই হাত পেছনে নিয়ে হাতকড়া পরিয়ে সিএমএম আদালতকক্ষে তোলা হয়। তখন সময় বিকেল ৪টা ১০ মিনিট। কাঠগড়ায় মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে থাকেন নূরুল হুদা।

তখন একজন পুলিশ কনস্টেবল তাঁর মাথা থেকে হেলমেটটি খুলে ফেলেন। পরে চশমা পরেন নূরুল হুদা। একজন আইনজীবী জানতে চেয়েছিলেন তিনি কেমন আছেন? জবাবে নূরুল হুদা ঘাড় ডান দিকে ঘুরিয়ে ইঙ্গিত দিলেন, ভালো। এরপর কাঠগড়ায় মুখ ভার করে মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে থাকেন তিনি।

নূরুল হুদাকে কাঠগড়ায় তোলার পাঁচ মিনিট পর ঢাকার সিএমএম মোস্তাফিজুর রহমান এজলাসে আসেন। নূরুল হুদার পাশে দাঁড়িয়ে ছিলেন গ্রেপ্তার সাবেক সংরক্ষিত মহিলা আসনের সদস্য সাবিনা আক্তার তুহিন ও মুন্সিগঞ্জ-৩ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ফয়সাল বিপ্লব। রাষ্ট্রপক্ষ থেকে সাবিনা আক্তারকে কারাগারে আটক রাখার আবেদন করা হয়। আদালত তাঁকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।

এরপর দিনের ভোট রাতে করাসহ বিভিন্ন অভিযোগে করা বিএনপি নেতা সালাউদ্দিন খানের মামলায় গ্রেপ্তার সাবেক সিইসি নূরুল হুদার ১০ দিনের রিমান্ড আবেদনের পক্ষে যুক্তি তুলে ধরতে শুরু করেন ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের প্রধান পাবলিক প্রসিকিউটার (পিপি) ওমর ফারুক ফারুকী।

সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নূরুল হুদাকে আজ সোমবার বিকেলে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করা হয়। প্রহসনের নির্বাচন করার অভিযোগে করা একটি মামলায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নূরুল হুদার চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত

পিপি আদালতকে বলেন, ‘ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার অবৈধ শাসনকে টিকিয়ে রাখতে যে কয়েকজন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন, তাঁদের মধ্যে অন্যতম হচ্ছেন সাবেক সিইসি নূরুল হুদা। উনি জনগণের হাতে কট হয়েছেন। উনাকে জনগণ ধরে ফেলেছেন।’

নূরুল হুদা জনগণকে ভোটাধিকার থেকে বঞ্চিত করেছেন অভিযোগ করে পিপি আদালতকে বলেন, ‘সাধারণ মানুষ, যাঁরা ভোটাধিকার থেকে বঞ্চিত হয়েছেন, তাঁরা এসব ব্যক্তির ওপর ভীষণ ক্ষিপ্ত। ফলে এসব ব্যক্তিকে দেখামাত্রই জনগণ ধরে ফেলছেন।’

পিপি ওমর ফারুক ফারুকী বলেন, ‘মাননীয় আদালত, ২০১৮ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে জনগণ নিশিরাতের নির্বাচন বলেই জানেন। নূরুল হুদা হচ্ছেন নিশিরাতের প্রধান নির্বাচন কমিশনার। উনি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে প্রতারণা করেছেন। জাতির সঙ্গে প্রতারণা করেছেন। এমন নিশিরাতের নির্বাচন করে উনারা কীভাবে মানুষকে চেহারা দেখান? উনারা এত বড় নির্লজ্জ, এখনো মানুষের মাঝে যান এবং হাসেন।’

এরপর ওমর ওমর ফারুক ফারুকী সাবেক সিইসি নূরুল হুদার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ আদালতের কাছে পড়ে শোনাতে থাকেন।

পরে পিপি আদালতকে বলেন, ‘উনি এমনই একজন প্রধান নির্বাচন কমিশনার, যিনি ডিসি (জেলা প্রশাসক), ইউএনও (উপজেলে প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা) ও পুলিশকে রাতেই ভোট বাক্স ভরার নির্দেশ দেন। এরপর তিনি আওয়ামী লীগকে নির্বাচিত ঘোষণা করেন। ভোট গ্রহণ শেষে তাদের বিরিয়ানি খাওয়ান। একটা তামাশার নির্বাচন করে জনগণের কোটি কোটি অর্থ তছরুপ করেছেন।’

এ সময় নূরুল হুদার আইনজীবী তৌহিদুল ইসলাম আদালতের কাছে দাবি করেন, নূরুল হুদা কোনো অপরাধ করেননি। অপরাধমূলক ষড়যন্ত্রসহ দণ্ডবিধির নির্বাচনসংক্রান্ত যেসব অপরাধ সংঘটিত করার অভিযোগ তাঁর মক্কেলের বিরুদ্ধে আনা হয়েছে, সেগুলো ভিত্তিহীন।

নূরুল হুদার আইনজীবী আদালতকে আরও বলেন, ‘মাননীয় আদালত, রাষ্ট্রপক্ষের বক্তব্যের প্রতি সম্মান রেখেই বলছি, নূরুল হুদাকে তাঁরা ১০ দিন রিমান্ডে চেয়েছেন। অথচ যেসব ধারায় তাঁর বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে, সেগুলো জামিনযোগ্য ধারা। মামলায় উনার বয়স ৭৭ বছর দেখানো হয়েছে। কিন্তু আমার মক্কেলের বয়স আরও বেশি। ফৌজদারি কার্যবিধির ৪৯৭ ধারা অনুযায়ী, একজন অসুস্থ ও বয়স্ক ব্যক্তি জামিন পাওয়ার অধিকার রাখেন। আমরা মনে করি, উনি জামিন পাওয়ার অধিকার রাখেন।

উচ্চ আদালতের নজির তুলে ধরে আইনজীবী তৌহিদুল বলেন, ‘মাননীয় আদালত, নূরুল হুদার বিরুদ্ধে জাল ভোটের অভিযোগ আনা হয়েছে। উনি তো প্রধান নির্বাচন কমিশনার। তিনি তো কোনো জাল ভোট দেননি। নির্বাচনসংক্রান্ত অপরাধ সংঘটিত করার যেসব অভিযোগ তাঁর বিরুদ্ধে আনা হয়েছে, সেগুলোর একটিও তাঁর সঙ্গে যায় না।’

নূরুল হুদার আইনজীবী আদালতকে আরও বলেন, ‘মাননীয় আদালত, নূরুল হুদার বিরুদ্ধে অপরাধমূলক ষড়যন্ত্র করার অভিযোগ আনা হয়েছে। অথচ ফৌজদারি কার্যবিধির ১৯৬ ধারা অনুযায়ী, উনি প্রধান নির্বাচন কমিশনার ছিলেন। অপরাধমূলক ষড়যন্ত্র করার অভিযোগের মামলার জন্য সরকারের পূর্ব অনুমোদন প্রয়োজন। কিন্তু এ ক্ষেত্রে সরকারের কোনো অনুমোদন না নিয়ে মামলা করা হয়েছে।’

নূরুল হুদার আইনজীবী বলেন, ‘যেহেতু নূরুল হুদার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগের প্রতিটি ধারা জামিনযোগ্য আর জামিনযোগ্য ধারার অপরাধের মামলায় রিমান্ডে নেওয়ার কোনো বিধান নেই বলে আমরা মনে করি। যেহেতু আমরা মনে করছি, মামলা ত্রুটিপূর্ণ, সেহেতু এ মামলায় নূরুল হুদাকে রিমান্ডে নেওয়ার কোনো যৌক্তিকতা নেই।’

এসব বক্তব্যের বিরোধিতা করে আদালতে পাল্টা যুক্তি তুলে ধরেন পিপি ওমর ফারুক ফারুকী। তিনি আদালতকে বলেন, ‘রাষ্ট্রদ্রোহের মামলায় সরকারের পূর্ব অনুমোদন প্রয়োজন। অপরাধমূলক ষড়যন্ত্রের মামলায় সরকারের পূর্ব অনুমোদনের কোনো প্রয়োজন নেই। আসামিপক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, জামিনযোগ্য ধারার অপরাধের মামলায় রিমান্ডে নেওয়ার কোনো বিধান নেই। আসামিপক্ষের এমন বক্তব্য একদম ঠিক নয়। ফৌজদারি কার্যবিধির ১৬৭ ধারা অনুযায়ী, রিমান্ড বলে আইনি কোনো কিছু নেই। আইনে ডিটেইন (আটক রাখা) শব্দটা রয়েছে। আসামিকে পুলিশ হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন আদালত।’

বিকেল ৫টা ১০ মিনিটে শুনানি শেষ হলে কাঠগড়া থেকে নূরুল হুদাকে হাজতখানায় নিয়ে যাওয়া হয়। এক ঘণ্টা তিনি কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে ছিলেন। পুরো সময় তাঁকে ভীষণ বিমর্ষ দেখা যায়।

Sunday, June 22, 2025

পুত্র সন্তানের বাবা হলেন সাংবাদিক মোঃ আনোয়ার হোসেনের আন্নু

পুত্র সন্তানের বাবা হলেন সাংবাদিক মোঃ আনোয়ার হোসেনের আন্নু

 





স্টাফ রিপোর্টার

পুত্র সন্তানের বাবা হলেন সাভার পৌরসভা ১ নং ওয়ার্ড বাড্ডা ভাটপাড়া এলাকায় স্থানী বাসিন্দা ও বিশেষ প্রতিনিধি বিডি নিউজ টুয়েন্টিফোর ও জাতীয় দৈনিক সূর্যোদয় পত্রিকা বিশেষ প্রতিনিধি আনোয়ার হোসেন আন্নু । শনিবার রাত ১১টা ৩৫ মিনিটে সুপার ক্লিনিক সিজারিয়ানের মাধ্যমে পুত্র সন্তানের জন্ম দেন সাংবাদিক স্ত্রী রাজেদা। বর্তমানে সুস্থ রয়েছেন মা ও ছেলে। প্রথম বাবা হলেন সাংবাদিক মোঃ আনোয়ার হোসেন আন্নু । সদ্য ভূমিষ্ট পুত্র সন্তানকে নিয়ে আনন্দের শেষ নেই তার। পুত্র সন্তানের বাবা হওয়ায় শুভেচ্ছা জানিয়েছেন পুরো দেশবাসীকে। স্ত্রী রাজেদা ও সদ্য ভূমিষ্ট পুত্র সন্তানের জন্য সকলের কাছে দোয়া চেয়েছেন সাংবাদিক মোঃ আনোয়ার হোসেন আন্নু।


Saturday, June 21, 2025

সাভারের ব্যাংক কর্মকর্তার বাড়িতে চুরি গ্রেপ্তার ২ জন

সাভারের ব্যাংক কর্মকর্তার বাড়িতে চুরি গ্রেপ্তার ২ জন

 



আনোয়ার হোসেন আন্নু বিশেষ প্রতিনিধি

সাভারে ইসলামী ব্যাংকের সিনিয়র এক কর্মকর্তার বাড়ির গ্রীল কেটে ১৫ লাখ টাকার মালামাল লুটের ঘটনায় দু’জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তবে এ ঘটনায় লুট হওয়া কোনো মালামাল উদ্ধার করতে পারেনি পুলিশ। বৃহস্পতিবার (১৯ জুন) সকালে গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করেন সাভার মডেল থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) শামসুল আলম। এর আগে গত বুধবার দুপুরে সাভার পৌর এলাকার দক্ষিণ রাজাশন মহল্লা থেকে বাদশা (২৮) ও শাকিল (২৬) নামে দু’জনকে আটক করে পুলিশ। তারা সাভার পৌর এলাকার রাজাশন মহল্লার বাসিন্দা। ভুক্তভোগী ব্যাংক কর্মকর্তা মাওলানা মুফতি মো. ওমর ফারুক সাভার পৌর এলাকার দক্ষিণ রাজাশন মহল্লার মৃত মকবুল হোসেনের ছেলে। তিনি বাংলাদেশ ইসলামী ব্যাংকের সিনিয়র কর্মকর্তা হিসেবে আশুলিয়ায় কর্মরত আছেন।

ভুক্তভোগীর লিখিত অভিযোগ থেকে জানা যায়, ঈদ-উল-আযহার ছুটিতে ব্যাংক কর্মকর্তা ওমর ফারুক পরিবার পরিজন নিয়ে গ্রামের বাড়ি ময়মনসিংহে যান। সেখানে অবস্থানকালে গত বুধবার গভীর রাতে চোরেরা পৌর এলাকার দক্ষিণ রাজাশন মহল্লার বাসার মেইন গেটের তালা ভাঙ্গার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়। পরে পেছনের জানালার গ্রিল কেটে ঘরের ভেতরে ঢুকে সমস্ত ঘর তছনছ করে। এ সময় চোররা বাড়িতে থাকা ডলার, স্ত্রীর স্বর্ণালঙ্কার এবং নগদ টাকাসহ ১৫ লাখ টাকার মালামাল লুট করে নিয়ে গেছে। ব্যাংক কর্মকর্তা মাওলানা মুফতি মো. ওমর ফারুক বলেন, আশপাশের বাড়ির সিসি ক্যামেরা ফুটেজ দেখে বুধবার দুপুরে এলাকার লোকজন বাদশা (২৮) ও শাকিলকে (২৬) আটক করে পুলিশে সোপর্দ করেছে। সাভার মডেল থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) শামসুল আলম বলেন, ব্যাংক কর্মকর্তার বাড়িতে চুরির ঘটনায় থানায় মামলা হয়েছে। সেই মামলায় দুই ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে। এছাড়া চুরির মালামাল উদ্ধারের জন্য অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলেও জানান তিনি।

Thursday, June 19, 2025

সাভারের ডা. জুবাইদা রহমানের ৫৩ তম  জন্মদিন পালন করলেন বিএনপির নেতা খোরশেদ আলম

সাভারের ডা. জুবাইদা রহমানের ৫৩ তম জন্মদিন পালন করলেন বিএনপির নেতা খোরশেদ আলম

 



আনোয়ার হোসেন আন্নু বিশেষ প্রতিনিধি

ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে সাভারে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সহধর্মিণী ও খ্যাতনামা চিকিৎসক ডা. জুবাইদা রহমানের ৫৩তম জন্মদিন পালিত হয়েছে। সন্ধ্যায় সাভার পৌরসভার ছায়াবীথি এলাকায় ঢাকা জেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোঃ খোরশেদ আলমের বাসভবনে দিনটি উদযাপন করা হয়েছে। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা জেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক কাউন্সিলর ও সাভার পৌরসভা জনপ্রিয় মেয়র প্রার্থী মোঃ খোরশেদ আলম।
এসময় ডা. জুবাইদা রহমানের সুস্থতা ও দীর্ঘায়ু কামনায় মহান আল্লাহর কাছে বিশেষ মোনাজাত করা হয়। এছাড়াও শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান, মরহুম রিয়াল এডমিরাল মাহাবুব আলী খান, আরাফাত রহমান কোকোর মাগফিরাত কামনা করা হয়। মোনাজাতে ডা. জুবাইদা রহমানের শাশুড়ি অসুস্থ বেগম খালেদা জিয়ার সুস্থতা কামনায় দোয়া প্রার্থনা করা হয়।
সাভারের ঢাকা জেলা ওলামাদলের আহ্বায়ক কমিটি পূর্ণাঙ্গ করার  প্রস্তুতি করে

সাভারের ঢাকা জেলা ওলামাদলের আহ্বায়ক কমিটি পূর্ণাঙ্গ করার প্রস্তুতি করে

 


আনোয়ার হোসেন আন্নু বিশেষ প্রতিনিধি

সাভারে ঢাকা জেলা ওলামাদলের আহ্বায়ক কমিটি পূর্নাঙ্গ করার লক্ষ্যে সাভার পৌরসভা ওলামাদলের প্রস্তুতি সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সাভার পৌরসভার ছায়াবীথি এলাকায় ঢাকা জেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোঃ খোরশেদ আলমের বাসভবনে এই প্রস্তুতি সভা অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা জেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক কাউন্সিলর ও সাভার পৌরসভা জনপ্রিয় মেয়র প্রার্থী মোঃ খোরশেদ আলম।

এতে প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জাতীয়তাবাদী ওলামাদলের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য এইচ এম মাসুদ রানা। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা জেলা ওলামাদলের সদস্য সচিব মোঃ রবিউল আউয়াল। প্রস্তুতি সভায় ঢাকা জেলা ওলামাদল নেতা মোঃ মাইন উদ্দিন মুন্নার সভাপতিত্বে ও সাভার পৌরসভা ছাত্রদল নেতা মোঃ তাজ খান নাঈমের সঞ্চালনায় বিশেষ বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা জেলা ওলামাদলের যুগ্ম আহবায়ক মোঃ কামরুজ্জামান শামীম, ঢাকা জেলা ওলামাদল নেতা কোহিনুর রহমান করিমসহ সাভার পৌর বিএনপি নেতা মোশারফ হোসেন, হযরত আলী, খান মজলিস বাবু, রাশেদুজ্জামান বাচ্চু, ইউনুস খান, মনিবুর রহমান চম্পক, উজ্জ্বল হোসেন ও মিজানুর রহমান প্রমূখ। এসময় প্রধান অতিথির বক্তব্যে খোরশেদ আলম বলেন, রাজনৈতিক জীবনে আমি এখনও পর্যন্ত অন্যায়ের সাথে কোনো আপোষ করি নাই, বাকি জীবনেও আপোষ করবো না ইনশাআল্লাহ। আমি সাভারবাসীকে জানাতে চাই, আমার কারণে আপনারা লজ্জা পাবেন না। কারণ দলের দুর্দিনে আমি পালিয়ে যাইনি বিএনপির সাথেই ছিলাম। তিনি আরও বলেন, বিএনপির দুর্দিনে যারা পাশে ছিলেন, যারা এখনো মাঠে আছেন, তাদের অবহেলা করা চলবে না। আমাদের সবার মনোযোগ রাখতে হবে যেন তারা দলের মূল্যায়ন পান।

Friday, June 6, 2025

সাভারের নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ নেতা সাদ্দাম গ্রেপ্তার করে পুলিশ

সাভারের নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ নেতা সাদ্দাম গ্রেপ্তার করে পুলিশ

 


আনোয়ার হোসেন আন্নু বিশেষ প্রতিনিধি

ঢাকার সাভারে ছাত্র-জনতার একদফা আন্দোলনের বিরুদ্ধে অংশ নেওয়া নিষিদ্ধ সংগঠন সাভার উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক যুগ্ম আহবায়ক মনির হোসেন সাদ্দামকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার (৬ জুন) রাতে পুলিশের বিশেষ অভিযানে সাভার পৌরসভার দক্ষিণ রাজাসন ঘাসমহল এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সাভার মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ জুয়েল মিঞা। গ্রেপ্তার মনির হোসেন সাদ্দাম ঢাকা জেলার সাভার উপজেলার দক্ষিণ রাজাসন ঘাসমহল এলাকার মঞ্জুর হোসেনের ছেলে।

পুলিশ জানায়, নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ নেতা মনির হোসেন সাদ্দাম ছাত্র-জনতার একদফা আন্দোলন চলাকালীন সময় হামলা ও গুলি বর্ষণে অংশ নেয়। দীর্ঘদিন পলাতক থাকার পর পরিস্থিতি শান্ত ভেবে এলাকায় ফিরে আইনশৃঙ্খলার অবনতি ঘটানোর চেষ্টা করছিল। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে সাভার মডেল থানা পুলিশের বিশেষ অভিযানে ঘাসমহল এলাকা থেকে মনির হোসেনকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ ব্যাপারে সাভার মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ জুয়েল মিঞা বলেন, মনির হোসেনের বিরুদ্ধে সাভারে ছাত্র হত্যার অভিযোগ রয়েছে। শুক্রবার তাকে আদালতে পাঠানো হবে। বৈষম্যবিরোধী ব্যানারে ছাত্র-জনতার একদফা আন্দোলনকারীরা গত ৪ ও ৫ আগস্ট সাভার ও আশুলিয়ার বাইপাইলে জমায়েত হতে থাকেন। এ সময় আন্দোলনরত শিক্ষার্থী ও জনতার ওপর হামলা চালায় আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গ সংগঠনের নেতারা। এ হামলায় প্রায় শতাধিক ছাত্র-জনতা নিহত এবং আহত হন সহস্রাধিক ছাত্র-জনতা।

Thursday, June 5, 2025

নিশিরাতে আলো ঝলমল করছিল, বিজয়ের উল্লাস ছিল, আর সঙ্গে ছিলেন একজন হামজা চৌধুরী।

নিশিরাতে আলো ঝলমল করছিল, বিজয়ের উল্লাস ছিল, আর সঙ্গে ছিলেন একজন হামজা চৌধুরী।

 

অনলাইন ডেস্ক

জাতীয় স্টেডিয়ামের ফ্লাডলাইট নিভে গেছে। গ্যালারির শোরগোল থেমে এসেছে। অন্ধকার ছড়িয়ে পড়া স্টেডিয়ামে তবু যেন আলোর কমতি নেই! রাতটা যে শুধুই ভুটানের বিপক্ষে একটা জয়ের নয়, নতুন শুরুর সাক্ষীও।

ভুটানকে ২-০ গোলে হারিয়ে বাংলাদেশ শুধু ম্যাচই জেতেনি, জিতেছে আত্মবিশ্বাসও। ফিরে পেয়েছে ফুটবল-উন্মাদনাও। সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ কোচ হাভিয়ের কাবরেরা এসেছিলেন ফুরফুরে মেজাজে। সঙ্গে ছিলেন তাঁর কোচিং স্টাফরাও। তাঁদের সাংবাদিকদের সারিতে বসিয়ে হেসে বললেন, ‘এটা প্রত্যাশিত জয়। সেট পিস থেকে গোল পেয়েছি আমরা, খেলোয়াড়দের মানসিকতাও ছিল দারুণ ইতিবাচক।

তবে আসল প্রশংসাটা এল প্রতিপক্ষের শিবির থেকে। ভুটানের জাপানি কোচ আতসুশি নাকামুরা বললেন, ‘হামজাই পার্থক্য গড়ে দিয়েছে। সে এক উঁচুমানের খেলোয়াড়। বল পায়ে এবং বল ছাড়া—দুই ভূমিকাতেই সে অনন্য। মাঠে তার উপস্থিতি অন্যরকম। এ ধরনের খেলোয়াড় যেকোনো দলের জন্যই সম্পদ।’

এরপর যোগ করলেন, ‘এই ম্যাচটি আমাদের জন্য কঠিন ছিল। গত বছর থিম্পুতে বাংলাদেশকে দেখেছি লম্বা বল খেলতে, কিন্তু এই বাংলাদেশ পাসিং, বিল্ডআপ ও মাঝমাঠের নিয়ন্ত্রণে অনেক উন্নতি করেছে। আর সেই পরিবর্তনের কেন্দ্রে হামজা।’ কাবরেরাও মেনে নিলেন সেই কথা, ‘হ্যাঁ, অবশ্যই। ভুটানের কোচের কথা মানছি আমি। হামজার সেট পিস থেকে গোল করা আমাদের পরিকল্পনার অংশ ছিল। তার গোল আমাদের পরিকল্পনা সফল করেছে।’


জাতীয় স্টেডিয়ামে দর্শকের প্রশংসা করলেন কাবরেরা। প্রশংসা করলেন ভুটানের কোচও, ‘আমি সাধারণত জোরে কথা বলি। কিন্তু আজ গ্যালারির আওয়াজে নিজের কথা নিজেই শুনতে পারছিলাম না। এটা স্বাভাবিক, হোম ম্যাচ। তবে দর্শক অসাধারণ ছিল। আমরা হারলেও ভালো ম্যাচ হয়েছে।

বাংলাদেশের একাদশে বুধবার দেখা গেল পাঁচ প্রবাসী ফুটবলারকে—হামজা চৌধুরী, জামাল ভূঁইয়া, কাজেম শাহ, ফাহামিদুল ইসলাম ও তারিক কাজী। এই একাদশ কিছুটা চমকপ্রদ—বিশেষ করে কাজেমের জায়গা পাওয়া, জামালের প্রত্যাবর্তন। এ নিয়ে কাবরেরার মন্তব্য, ‘এই লাইনআপে আমি সন্তুষ্ট। সবাই আত্মবিশ্বাস নিয়ে খেলেছে।’

বাংলাদেশের হয়ে অভিষেক হয়েছে ফাহামিদুল ইসলামেরঅভিষিক্ত ফাহামিদুল ইসলাম আলোচনায় এসেছেন প্রথম ম্যাচেই। চোখে পড়ার মতো দৌড়, দু-তিনটি সাহসী শট। কিন্তু গোল পাননি। দ্বিতীয়ার্ধে কোচ তাঁকে তুলে নেন, তবে তাঁর খেলা নিয়ে কাবরেরা সন্তুষ্টই, ‘সে একটু নার্ভাস ছিল। স্বাভাবিক, প্রথম ম্যাচ। কিন্তু আমি তার খেলায় খুশি। ম্যাচ টাইম পেলে আরও ভালো করবে।’

১০ জুন সিঙ্গাপুরের বিপক্ষে এশিয়ান কাপ বাছাইপর্বের ম্যাচের আগে এই প্রস্তুতি কতটা কার্যকর? কাবরেরার সোজাসাপটা উত্তর, ‘খুব ভালো। মাঠের পরিবেশ অসাধারণ লেগেছে আমার কাছে। আমরা উপভোগ করেছি।

উপভোগ করেছেন কানাডাপ্রবাসী শমিত সোমও। শমিত ভোরে ঢাকায় এসে সন্ধ্যায় বাংলাদেশ-ভুটান ম্যাচ দেখেছেন। ১০ জুন তাঁর অভিষেক হওয়ার কথা। সেদিন মাঠে হামজা, শমিত, ফাহামিদুলের বাংলাদেশকে দেখতে হয়তো দর্শকের ঢল নামবে।

বাংলাদেশের দুই গোলদাতা সোহেল রানা ও হামজা চৌধুরী
তবে এই রাত পুরোপুরি নিখুঁত ছিল না। ম্যাচ চলাকালে মাঠে ঢুকে পড়ে দুজন দর্শক। ম্যাচ শেষে ঢুকেছে আরও একজন। আবারও সেই পুরোনো শঙ্কা—কোনো জরিমানা আসছে না তো? ম্যাচ শুরুর পর স্টেডিয়ামের বাইরে ফটক ভেঙে গ্যালারিতে ঢুকে পড়েছেন দর্শক। ঢাকা স্টেডিয়ামে ফুটবল ফিরেছে। কিন্তু ব্যবস্থাপনায় পুরোনো সেই রুগ্ণ ছবিটা রয়েই গেল। তবুও এ কথা বলতেই হয়—এই রাতে আলো ছিল, জয় ছিল, আর ছিল একজন—হামজা চৌধুরী।