Sunday, April 6, 2025

যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে ট্রাম্পের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ছে

SHARE

রয়টার্স

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং ধনকুবের ইলন মাস্কের বিরুদ্ধে দেশজুড়ে ব্যাপক বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়েছে। ট্রাম্প ক্ষমতায় আসার পর থেকে যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় সরকার ব্যাপক হারে কর্মী ছাঁটাই করেছে এবং প্রেসিডেন্টের নির্বাহী ক্ষমতার অপব্যবহারসহ নানা কারণে বিক্ষোভ শুরু হয়। শনিবার, দেশটির ৫০টি অঙ্গরাজ্যে প্রায় ১,২০০ বিক্ষোভ ও সমাবেশ আয়োজনের পরিকল্পনা ছিল। ট্রাম্পের দ্বিতীয় মেয়াদে এক দিনে এটি ছিল সবচেয়ে বড় বিক্ষোভ।


ওয়াশিংটনে গতকাল আকাশ ছিল মেঘলা এবং হালকা বৃষ্টি ছিল। এর মধ্যেই হাজার হাজার বিক্ষোভকারী শহরের বিভিন্ন এলাকায় জড়ো হতে শুরু করেন। ওয়াশিংটনের কানেটিকাট অ্যাভিনিউয়ে বিক্ষোভকারীদের লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়। তারা বাসের জন্য ন্যাশনাল মল এলাকায় যাওয়ার অপেক্ষায় ছিলেন। বিক্ষোভকারীদের হাতে ছিল ‘যুক্তরাষ্ট্রে রাজা নেই’ এবং ‘মাস্ককে বিতাড়িত করুন’ লেখা প্ল্যাকার্ড। বিক্ষোভের আয়োজকরা আশা করেছিলেন, ন্যাশনাল মল এলাকায় ২০ হাজারের বেশি মানুষ একত্রিত হবে। এই বিক্ষোভের নাম ছিল ‘হ্যান্ডস অফ’, যার মানে হতে পারে ‘আমাদের নিজের মতো চলতে দাও’। বিক্ষোভে দেড় শতাধিক গোষ্ঠী অংশ নিয়েছিল, যার মধ্যে একটি ছিল ‘ইনডিভিজিবল’। গোষ্ঠীটির সহপ্রতিষ্ঠাতা এজরা লেভিন বলেছিলেন, বিশাল এই বিক্ষোভের মাধ্যমে তারা ট্রাম্প, ইলন মাস্ক, রিপাবলিকান কংগ্রেস সদস্য এবং তাদের মিত্রদের কাছে স্পষ্ট বার্তা পাঠাতে চান যে, যুক্তরাষ্ট্রের গণতন্ত্রের ওপর কোনো হস্তক্ষেপ মেনে নেওয়া হবে না।


যতটুকু জানা গেছে, গত জানুয়ারিতে প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর ট্রাম্পের অধীনে ইলন মাস্ক কেন্দ্রীয় সরকারের নতুন গঠন করা দক্ষতা বিভাগের (ডিওজিই) দায়িত্বে আসেন। এরপর ২৩ লাখ কেন্দ্রীয় কর্মীর মধ্যে ২ লাখেরও বেশি কর্মী ছাঁটাই করা হয়। এর মধ্যে, মেরিল্যান্ড অঙ্গরাজ্যের বাল্টিমোর শহরের কাছে সামাজিক নিরাপত্তা প্রশাসনের অফিসের বাইরে শত শত মানুষ প্রতিবাদ জানাতে দাঁড়িয়ে ছিলেন। এই অফিসে সম্প্রতি ৭ হাজার কর্মী ছাঁটাই করার ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। বিক্ষোভকারীদের হাতে ছিল স্লোগান লেখা প্ল্যাকার্ড, যেমন, ‘আমাদের দেশ কোথায় যাচ্ছে’, ‘ডিওজিইকে চাকরিচ্যুত করুন’, ‘মাস্ককে মঙ্গল গ্রহে পাঠিয়ে দিন’। বিক্ষোভকারীদের একজন লিন্ডা ফ্যালকাও বলেছিলেন, ‘আমি আতঙ্কিত, আমি ক্ষুব্ধ। যুক্তরাষ্ট্রের ভবিষ্যৎ নিয়ে আমি ভীত।’



প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় আসার পর তার বিভিন্ন পদক্ষেপের বিরুদ্ধে সমালোচনা চলছে। ২০ জানুয়ারি শপথ গ্রহণের পর থেকেই তিনি একের পর এক নির্বাহী আদেশে সই করেছেন, যেগুলোর মধ্যে রয়েছে অবৈধ অভিবাসন, বিদেশি সহায়তা, এবং ট্রান্সজেন্ডার অধিকার সংক্রান্ত আদেশ। এসব আদেশের বিরুদ্ধে অনেক অঙ্গরাজ্যে মামলা হয়েছে, এবং কিছু আদেশ আদালত স্থগিতও করেছে। এদিকে, গতকাল ইউরোপের বিভিন্ন শহরেও ট্রাম্পবিরোধী বিক্ষোভ শুরু হয়েছিল। বার্লিন, ফ্রাঙ্কফুর্ট, প্যারিস এবং লন্ডনে বিক্ষোভকারীরা ট্রাম্পের অভ্যন্তরীণ ও পররাষ্ট্রনীতি নিয়ে প্রতিবাদ জানাতে একত্রিত হন। তাদের হাতে ছিল ‘আইনের শাসন’, ‘অত্যাচারী শাসককে প্রতিহত করুন’, ‘গণতন্ত্র রক্ষা করুন’ স্লোগান সম্বলিত প্ল্যাকার্ড।
SHARE

Author: verified_user

0 comments: